Logo

অর্থনীতি    >>   ভারতের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে তামাবিল স্থলবন্দরে কর্মচাঞ্চল্যের ফিরতি

ভারতের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে তামাবিল স্থলবন্দরে কর্মচাঞ্চল্যের ফিরতি

ভারতের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে তামাবিল স্থলবন্দরে কর্মচাঞ্চল্যের ফিরতি

দীর্ঘ ছয় বছর পর তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে কয়লা আমদানি শুরু হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন বাংলাদেশের আমদানিকারক ও শ্রমিকরা। ভারত থেকে কয়লা আমদানি বন্ধ থাকায় ভোগান্তি ও অর্থনৈতিক ক্ষতির শিকার হওয়া এ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা এখন নতুন করে আশার আলো দেখছেন। এ বন্দরে ফিরে এসেছে কর্মচাঞ্চল্য।

কয়লা আমদানি শুরু: শ্রমিকদের ব্যস্ততা

ভারত থেকে কয়লা বোঝাই ট্রাক এসে পৌঁছানোর পর শ্রমিকরা দ্রুত সেই কয়লা খালাসে মনোনিবেশ করেছেন। শ্রমিকদের ভাষায়, কয়লা আমদানি শুরুর ফলে কর্মসংস্থান ও আয়-রোজগার বেড়ে গেছে। তারা জানিয়েছেন, গত ছয় বছরে কাজের অভাবে তাদের জীবিকা কঠিন হয়ে পড়েছিল।

বন্দর সংশ্লিষ্ট এক শ্রমিক বলেন, “এখন বন্দরের কাজের চাপ বেড়ে গেছে, ফলে আয়ও আগের তুলনায় অনেক ভালো। আমরা চাই, আমদানি যেন নিরবচ্ছিন্নভাবে চলতে থাকে।”

২০১৮ সালে ভারতের একটি আদালত মেঘালয়ের কয়লা উত্তোলন এবং তা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এর ফলে বাংলাদেশে কয়লা আমদানি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ৮০০ আমদানিকারকের অন্তত ১০০ কোটি টাকার এলসি স্থগিত হয়ে যায়, যা আমদানিকারকদের অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে।

বিশেষ করে তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন ৫ থেকে ৭ কোটি টাকার পণ্য আমদানি-রফতানি হত, যা নিষেধাজ্ঞার পর কমে দাঁড়ায় মাত্র ৭০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকায়।

চলতি বছরের অক্টোবরের শেষে কয়লা আমদানি ফের শুরু হওয়ায় নতুন করে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের এই প্রবাহ যাতে ভবিষ্যতে আর বাধাগ্রস্ত না হয়, সে ব্যবস্থা নিতে হবে।

তারা বলেন, “আমাদের কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। স্থলবন্দরের সীমানা বাড়ানোর মাধ্যমে কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত হলে আমদানি-রফতানি দ্বিগুণ হবে।”

বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক জানান, দেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বন্দরের কার্যক্রম কিছুটা মন্থর ছিল। তবে পরিস্থিতি এখন উন্নতির দিকে। তিনি বলেন, "আগের তুলনায় ট্রাকের সংখ্যা কম হলেও আশা করছি শিগগিরই আমদানি-রফতানি কার্যক্রম আগের পর্যায়ে ফিরে আসবে।"

আমদানিকারক ও বন্দর সংশ্লিষ্টরা তামাবিল স্থলবন্দরের কার্যক্রম আরও গতিশীল করার জন্য নতুন পরিকল্পনা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। সীমানা বাড়ানো, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং সুষ্ঠু প্রশাসনিক ব্যবস্থার মাধ্যমে এ স্থলবন্দরকে দেশের অন্যতম প্রধান বানিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ রয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

তামাবিল স্থলবন্দরের কর্মচাঞ্চল্যের এই প্রত্যাবর্তন শুধু স্থানীয় শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের জন্যই নয়, বরং দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক একটি পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।